alatulbd

এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল খাওয়ার উপকারিতা

শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে অলিভ অয়েলের জুড়ি নেই। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। সেই সঙ্গে কমায় কোলেস্টেরলের মাত্রা, হৃদরোগের ঝুঁকি, ডায়াবেটিস, এবং হজমের সমস্যা। এর পাশাপাশি রান্নায় স্বাদ-গুণ বাড়াতে অলিভ অয়েলের ব্যবহার অতুলনীয়। অলিভ অয়েল শুধু খাওয়ার জন্যই নয়, এটি গায়েও মাখা যায়। এতে ত্বকের জন্য উপকারী নানা পুষ্টিগুণ রয়েছে।

অলিভ অয়েলের পুষ্টিগুণ
অলিভ অয়েলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে, ই, ক্যালসিয়াম এবং পটাসিয়াম আছে। এটি oleic acid ও palmitoleic acid-এর মতো উপকারী উপাদানেও সমৃদ্ধ। অলিভ অয়েলে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তে মিশে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

অলিভ অয়েলের নানাবিধ কার্যকারিতা
শীতকালে অলিভ অয়েল খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যারা দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন একটা করে জলপাই খান। নিয়মিত জলপাই খেলে পিত্তথলির পিত্তরস ভালভাবেকাজ করে। পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

শুধু তাই নয়, অলিভ অয়েল সর্দি-কাশিও প্রতিরোধ করে। এতে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ত্বক ও চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। যাদের চুল পড়ার সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত জলপাই খান এবং প্রয়োজনে চুলে অলিভ অয়েল লাগান। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুলে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। এর পাশাপাশি জলপাইয়ের তেল সেলুলার স্ট্রেস কমিয়ে অকাল বার্ধক্য রুখে দেয়।

চলুন একনজরে দেখে নিই, অলিভ অয়েল কিভাবে আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে-

অলিভ অয়েলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ফ্যাট

শরীরকে সুস্থ রাখতে অলিভ অয়েলে থাকা উপকারী ফ্যাট প্রয়োজন। বিশেষ করে হরমোনাল এবং ব্রেন ফাংশন ঠিক রাখতে উপকারী ফ্যাটের কোনো বিকল্প নেই। তাই, নিয়মিত অলিভ অয়েল খাওয়া খুব জরুরি। বিশেষ করে oleic acid-এর মতো monounsaturated fat স্বাস্থ্যের জন্য খুবই অনুকূল। এতে আরো রয়েছে ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে আমাদের বাড়তি সুরক্ষা দেয়।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে

আমাদের খাদ্যাভ্যাসে অলিভ অয়েলের ব্যবহার খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে হার্টের যেকোনো বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা হ্রাস পায়।, অলিভ অয়েলে উপস্থিত polyphenols নামক উপাদানটি কোষের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এ কারণে arterial wall-এর ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি পায়। আমাদের পাকস্থলীর জন্য এ তেল দারুণ উপকারী।

ডায়াবেটিসকে দূরে রাখে

নিয়মিত এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল খান, দেখবেন ডায়াবেটিস আপনার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না। কারণ, অলিভ অয়েলে বিদ্যমান পলি ও মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং কার্বোহাইড্রেট শোষণ করে, যা ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

পেটের রোগের প্রকোপ কমে

গ্যাস-অম্বলের সাথে বদহজমের সমস্যাও এখন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী, তেমনি আছে বদহজমের সমস্যাও। অলিভ অয়েলে রয়েছে monosaturated fat যা bowel movement এর উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হয়ে যায়। তাই, বিশেষজ্ঞরা বেশি বেশি অলিভ অয়েল খাওয়ার পরামর্শ দেন। নিয়মিত এক চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে সমপরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ভাল হয়।

ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি দূরে রাখে

জলপাইয়ের তেলে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানকে ধ্বংস করে oxidative damage প্রতিরোধ করে। সেই সঙ্গে এটি ক্যান্সার সেলগুলিকেও ধ্বংস করে দেয়। নিয়মিত অলিভ অয়েল খাওয়ার ফলে আমাদের দেহের অস্বাভাবিক কোষ গঠন বাধাপ্রাপ্ত হয়। পাশাপাশি এটি এপিজেনিক পরিবর্তন থেকেও শরীরকে রক্ষা করে। ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পায়।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে

অলিভ অয়েলে প্রচুর পরিমাণে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও পলিফেনাল মজুদ থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই, পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাসায় তৈরি খাবারে অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। বাড়তি পুষ্টিগুণ পেতে কাঁচা অলিভ অয়েলও খেতে পারেন।

Back to list

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *