Uncategorized

একটি দিন নষ্ট করার অপরাধ!!

বড় দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো, বর্তমান অনেকের কাছে সময় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের মানুষদের মধ্যে অনেকে তাদের সঈী-সাথিকে বলে, চলো, আমরা গল্পগুজব করে কিছুটা সময় অতিবাহিত করি।এমন কথার দ্বারাই সময়ের প্রতি তাদের অবহেলা, গুরুত্বহীনতা ও আল্লাহর (নৈকট্য) থেকে দূরে সরে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। জনৈক ব্যক্তি সত্যই বলেছেন, অযথা সময় নষ্ট করা সময়ের প্রতি অবজ্ঞার আলামত বহন করে।

‘ হে অকৃতজ্ঞ

কতিপয় উলামায়ে কিরামের মতে ———— ( সময়ের অপব্যবহার) বলতে বোঝায়

যদি কোনো ব্যক্তি তার ওপর অর্পিত কোনো ফরজ আদায় মর্যাদাপূর্ণ দায়িত্ব পালন, আল্লাহর প্রশংসা আদায় বা তাসবিহ পাঠ, যেকোনো ভালো কাজ অথবা তার অর্জিত উপকারী ইলমকে কাজে লাগানো ইত্যাদির মধ্য দিয়ে তার দিন অতিবাহিত না করে, তাহলে সে ওই দিনের প্রতি অকৃতজ্ঞ হলো।
কীভাবে তুমি নিজের সময় গুলোকে হত্যা করছ!?

(১) প্রতিনিয়ত (তোমার) টেলিভিশনে অনলাইন চ্যানেলগুলো দেখা এবং সব সময় সেগুলোর প্রতি আসক্ত হয়ে থাকা।

(২) বেশি বেশি ঘুমানো এবং প্রত্যেকবার ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ সুখকর বিশ্রাম গ্রহণ করা।

(৩) গুরুত্বপূর্ণ পড়া বাদ দিয়ে অযথা পত্র পত্রিকা নিয়ে পড়ে থাকা।

(৪) অনর্থক মোবাইলে কথা বলা, শুধু শুধু এদিক সেদিক কল দিয়ে সময় নষ্ট করা।

(৫) শরিয়াহস্মত কিংবা শরিয়াহ -গর্হিত পন্হায় আনন্দ ভ্রমণ করা ইত্যাদি।

( সুযোগ হারালে…)

(১) সুযোগ চলে গেলে… তুমি বাবা – মায়ের সাথে সদাচরণ করার ইচ্ছা করো; অথচ তখন তোমার বাবা – মা কবরে শায়িত।

(২) সুযোগ চলে গেলে… জুমআর দিন তুমি সুরা কাহফ তিলাওয়াত করার ইচ্ছা করো ঠিক তখন, যখন মাগরীবের সময় প্রায় শেষ।

(৩) সুযোগ চলে গেলে… তুমি ফজরের নামাজ পড়তে চাও তখন, যখন সূর্যের কিরণ বিচ্ছুরিত হবে হবে অবস্থা।

(৪) সুযোগ চলে গেলে… তুমি তখন অন্যের সাথে কৃত ওয়াদা পূরণ করতে চাও, যখন তোমার ও তার মাঝে দীর্ঘ পথের দূরত্ব হয়ে গেছে।

(৫) সুযোগ চলে গেলে… পরীক্ষা শুরু হবার আর মাএ কয়েক মুহূর্ত বাকি, তখন তোমার পড়ার ইচ্ছা জাগে।

(৬) সুযোগ চলে গেলে… তুমি তাওবা করতে চাও; অথচ ততক্ষণে রুহ কণ্ঠনালীতে পৌঁছে গেছে, মৃত্যুযন্ত্রণা শুরু হয়ে গেছে, মালাকুল মউত তার দায়িত্ব আদায় করছে।

(ইমাম মুয়াফফিক বিন কুদামাহর উপদেশ)

ইমাম মুয়াফফিক বিন কুদামাহর অসিয়ত:

তোমার মুল্যবান জীবনকে গনিমত মনে করো, গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোর প্রতি যত্নবান হও। মনে রেখো, জীবনটা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে আবদ্ধ, নিশ্বাসের সংখ্যা নির্ধারিত। তাই একেকটি নিশ্বাস ত্যাগের মাধ্যমে তোমার জীবন থেকে একটু একটু করে সময় ক্ষয়ে পড়ছে। জীবনটা খুবই ছোট। মাএ কয়েকটি দিন মাএ। এর প্রতিটি অংশ হীরা – জহরতের চেয়েও মুল্যবান। যার কোনো তুলনা এবং স্হলাভিষিক্ত হয় না। অল্প কিছু দিনের এই ক্ষুদ্র জীবনটা অতিবাহিত হওয়ার পর কেউ চিরস্থায়ী শান্তিতে থাকবে আবার কেউ চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগ করবে। যখন তুমি এই ক্ষণস্থায়ী জীবনকে চিরস্থায়ী ভাবতে থাকবে, তখন তোমার কাছে একেকটি নিশ্বাস জান্নাতের হাজার হাজার বছররের সমান মনে হবে। যা অনুমান করা অসম্ভব। আর যদি কারও অবস্থা এমনই হয়, তাহলে এর কোনো মূল্যই নেই। অতএব, মুক্তাতুল্য জীবনের সময় গুলোকে কর্মহীন নষ্ট করে দিয়ো না। কোনো মূল্য ছাড়া সময়গুলো অতিবাহিত করো না। সর্বদা চেষ্টা করো, যেন তোমার একটি নিশ্বাসও আল্লাহর আনুগত্যের বাইরে ব্যয় না হয়। কারণ, তোমার কাছে যদি দুনিয়ার কোনো মুণিমুক্তা থাকে, তাহলে তা নষ্ট করা তোমার জন্য শোভা পারে না। সুতরাং কীভাবে তুমি হীরার চেয়েও মূল্যবান নিজের জীবনটা অবহেলায় নষ্ট করে দেবে?! অনর্থক নষ্ট হয়ে যাওয়া অতীতের জন্য কেনই – বা দুঃখ হবে না?

[বই: সময়ের সঠিক ব্যবহার]

Back to list

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *